পদ্মা সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে টোলপ্লাজার সামনে সংযোগ সড়ক থেকে নাওডোবা জমাদ্দার মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ যানজটে আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়েন শত শত যানবাহনের যাত্রীরা।
স্থানীয় ইব্রাহিম ও শরীয়তপুর পরিহবণের যাত্রী আতাউর রহমান, মিজানুর রহমান, পপি খানমসহ কয়েকজন যাত্রী ও চালক জসিম বেপারী জানান, পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ যাতায়াত করেন। গত সোমবার ঈদুল আজহার ছুটি শেষ হয়েছে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে অনেকেই পরিবার রেখে মঙ্গলবার সকাল থেকে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার জন্য মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। বৃহস্পকিবার ও শুক্রবার ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল খুব বেশি। তাই সকাল থেকেই যাত্রী বেড়েছে কয়েক গুণ।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে মানুষ শরীয়তপুরের জাজিরা-শিমুলিয়া ও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে চলাচল করত। তাই দিনে দিনে মানুষ পদ্মা নদী পার হতো। এখন পদ্মা সেতু থাকার কারণে সার্বক্ষণিক যাতায়াতের সুযোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে দক্ষিণের অনেক যানবাহন ঢাকা গেছে। তবে কোনো যানজট দেখা যায়নি এবং ভোগান্তি ছাড়াই মানুষ টোল প্রদান করে সেতুতে উঠতে পেরেছে। সন্ধ্যার পরই চিত্র পাল্টে যায়।
পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। রাত ১১টা পর্যন্ত যানজট থাকলেও ভোররাত স্বাভাবিক ছিল। পরে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আবার যানজট শুরু হয়। বেলা যত বাড়ে তত যানজট বাড়তে থাকে। আস্তে আস্তে টোল প্লাজার সামনে থেকে সংযোগ সড়কের জাজিরার নাওডোবা জমাদ্দার মোড় পর্যন্ত সাড়ে দুই কিলোমিটারজুড়ে যানবাহন আটকা পড়ে কয়েক শত গাড়ি। প্রতিটি যানবাহন এক ঘণ্টার ওপরে অপেক্ষা করার পর টোল প্রদান করে সেতুতে উঠেছে বলে যাত্রী সায়েদ ঢালী জানান।
শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের যাত্রী মিজান মুন্সি বলেন, বেলা ১১টার দিকে নাওডোবার জমাদ্দার মোড়ে পৌঁছায়। যানজটের কারণে ২ ঘণ্টা বসে ছিলাম। ২টার পরে বাস নিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠি। ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করে টোলপ্লাজায় পৌঁছেছি।
ঢাকা-খুলনা সড়কের ইমু পরিবহণের চালক আফজাল হোসেন বলেন, দেড় ঘণ্টা ধরে সংযোগ সড়কে বসে আছি। দুদিন ধরে একটু বেশি যানজট থাকে। আমাদের এক-দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করে সেতুতে উঠতে হয়। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়ে যায়।
পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ম্যানেজার কামাল হোসেন বলেন, যানবাহন থেকে টোল আদায় করার জন্য ছয়টি বুথ রয়েছে। সেখান থেকে যানবাহনগুলো টোল প্রদান করে সেতুতে ওঠে। একেকটি গাড়ির টোল দিতে সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৫০ সেকেন্ড সময় লাগে। সড়কে গাড়ির চাপ থাকায় ২ দিন ধরে একটু বেশি যানজট দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা এসেছে। দিনভর দক্ষিণের জেলাগুলোয় প্রয়োজনীয় কাজ করেন মানুষ। কাজ শেষে রাতে তারা ঢাকায় ফিরেছেন। এছাড়া ঈদে গ্রামে যাওয়া মানুষ এখনো ঢাকায় ফিরছেন। যখন ঢাকামুখী গাড়ির চাপ বেড়ে যায়, তখন যানজট সৃষ্টি হয়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।